“Book Descriptions: ৩৪৩ সালকাব্দ। শীত শেষের শালবনের মত রিক্ত নিঃস্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে উত্তরাপথ। সুপ্রাচীন প্রথাকে ভেঙে কিষ্কিন্ধ্যা জন্ম দিচ্ছে তার প্রথম রাজার। আর আট বছরের রক্তস্নান শেষে ক্লান্ত সম্রাট তখন রচনা করছে তাণ্ডব স্তোত্র। তবু দক্ষিণ আকাশে শোণিতের বাস! তবু এক ঋষি, এক প্রেমিক আর এক পুরুষ (?) সন্ধান করে চলে তাদের নিয়তির। সেই পুরুষ যার ব্যক্তিমায়া অতিক্রম করতে পারে না স্বয়ং মহেশ মহেশ্বর। যার রথচক্রের ধুলোয় ঝড় ওঠে দক্ষিণের সমুদ্রমেখলায়, শত দগ্ধ জনপদের ভস্ম ওড়ে সেই ঝড়ে — একে একে তা গ্রাস করে কোশল, কুরু, পাঞ্চাল, অলকাপুরী। সেবার সে ঝড় থামিয়েছিল একাকিনী এক মুণ্ডিতমস্তকা ব্রহ্মবাদিনী। কিন্তু এবার? ক্ষুদ্র স্বার্থ আর নেতৃহীনতায় দীর্ণ উত্তরাপথ কি এবার মালিনীর মতোই নিজেকে মুছে ফেলবে এক প্রশ্নহীন আনুগত্যে? নাকি শতবর্ষের অবিশ্বাস আর শত্রুতার ইতিহাস পেরিয়ে শেষবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হবে দাক্ষিণাত্যের অরণ্যে পর্বতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঋক্ষ বানর নাগ পক্ষীদের দল? নচেৎ মহাকাল যে বড় নির্মম! কড়ায় গণ্ডায় তার শোধ মিটিয়ে দিতে হবে সকলকেই।
কালদক্ষিণা শুধু যুযুধান দুটিপক্ষ নয়, একাধিক মতাদর্শ, অগণিত জীবনবোধ আর আপাত বিপরীত দুটি সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্বের চিরন্তন কাহিনী। ইতিহাসের আকরে বর্তমানকে খুঁজে পাওয়ার নাম এই কালদক্ষিণা। প্রচলিত মিথের অন্তরাল থেকে সত্যের রূপভেদের সাধনা এই কালদক্ষিণা। শুধুই কি রাজ্যলিপ্সা? নারীসঙ্গবাসনা? তাই কি ব্রহ্মজ্ঞানী বন্দিনী করে আনে সাতাত্তর সহস্র রমণী? নাকি মননের গভীরে বাসা বেঁধে থাকে কোন দুস্তর অতীতের সাক্ষর? সময়ের অরৈখিক গতিতে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজল এই গ্রন্থ। ভারতের প্রতিটি মানুষের চেতনায় গ্রন্থিত রামায়ণের যে কাহিনী, তারই এক ভিন্ন আঙ্গিকের সূত্রে সমকালীন সময়কে অনুবীক্ষণের নীচে নিয়ে এল কালদক্ষিণা। জিয়ন কাঠি ছোঁয়ালো সেই রাবণকথাকে যে ঘুমিয়ে আছে চিরচেনা রামকথার হৃদয়কোরকে।” DRIVE