সেদিন চৈত্রমাস
(By Krishnendu Mukhopadhyay) Read EbookSize | 20 MB (20,079 KB) |
---|---|
Format | |
Downloaded | 570 times |
Last checked | 7 Hour ago! |
Author | Krishnendu Mukhopadhyay |
সাল ২০২০ - বছরের শুরু থেকেই ভারতীয় নিউজ মিডিয়ার চর্চার বিষয়বস্তু ছিল করোনা সংক্রমণ এবং এই ভাইরাসের দ্বারা কিভাবে আক্রান্ত হচ্ছে বিশ্বের বহু দেশ। ধীরে ধীরে এই ভাইরাস থাবা বসাল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। কেরালা, মহারাষ্ট্র এবং অন্যান্য রাজ্য হয়ে এই বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল এই মহামারী। মার্চের ২৫ তারিখ রাত বারোটা থেকে গোটা দেশে ২১দিনের টানা লকডাউনের ঘোষণা জারি করলেন প্রধানমন্ত্রী।
আর তাতেই আটকে পড়ল এই উপন্যাসের অন্যতম কেন্দ্র্রীয় চরিত্র স্নেহা। যার বাড়ি শিলিগুড়িতে, কিন্তু জীবিকা নির্বাহের জন্য তাকে থাকতে হয় নিউটাউনের একটা ফ্ল্যাটে। এই আবাসনের আশেপাশের প্রায় সমস্ত বাসিন্দারাই তাদের নিজের নিজের শহরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলেও, স্নেহার পক্ষে সেই সময় কিছু জোগাড় করে হয়ে উঠে না। ফলে তাকে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়তে হয় নিউটাউনের এই ফ্ল্যাটে। আর এখানেই ঘটনাচক্রে তার সাথে ফোনের মাধ্যমে আলাপ হয় আমেরিকা ফেরত সুদর্শন যুবক মিতদ্রুর। আমেরিকা থেকে কাজের সূত্রে তাকে আসতে হয়েছে নিউটাউনের এই আবাসিকে এবং সরকারি নিয়মে সে নিজেকে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাবন্দি করেছে হোম কোয়ারেন্টাইনে। সামনাসামনি কারুর সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে সে নারাজ। ফলে ফোনই হয়ে ওঠে এইসময় যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন। নিজেদের প্রয়োজনীয়তা থেকে কথাবার্তা শুরু হলেও, ধীরে ধীরে তা ব্যক্তিগত স্তরে নেমে আসতে বেশি সময় লাগেনি। নিজেদের ভালো লাগার কথা, প্রফেশনাল লাইফের কথা, সুবিধা-অসুবিধার কথা সব শেয়ার করতে থাকে নির্দ্বিধায়। এই অসহনীয় গৃহবন্দী অবস্থায় তাদের মধ্যে একটা অন্য সম্পর্কের সমীকরণ গড়ে উঠতে থাকে। স্নেহার মনে এই সময় একটা অন্য ভালোলাগা গড়ে ওঠে মিতদ্রুকে ঘিরে। কিন্তু সে এই ভালোলাগার কথা লজ্জায় প্রকাশ করে করে না মিতদ্রুর কাছে। একসময় মিতদ্রুর সহায়তার স্নেহা তার নিজের বাড়ি শিলিগুড়িতে ফিরতে সক্ষম হয়। কিন্তু যাবার আগেও ঘটনাচক্রে তার সাথে মিতদ্রুর সামনাসামনি দেখা হয় না। জীবনযাত্রার জটিলতার কারনে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যের এই যোগাযোগওশুধুমাত্র বন্ধ হয়ে যায় একসময়। শুধুমাত্র সেই সময়ের ফোনালাপের মিষ্টিমধুর স্মৃতিটুকুই রয়ে যায় স্নেহার মনে।
এরপর কেটে গেছে অনেকটা সময়। ফার্স্ট ওয়েভ, সেকেন্ড ওয়েভ, থার্ড ওয়েভ কাটিয়ে গোটা বিশ্ব ধীরে ধীরে ফিরছে তার পুরনো ছন্দে। স্নেহাও তার কাজের সূত্রে এসে উপস্থিত হয় শান্তিনিকেতনের প্রান্তিক স্টেশনে। হৈমন্তী নামের বড়লোকের এক আদুরে কন্যার প্রি-ওয়েডিং ব্রাইডাল মেকাপের ভার পরেছে তার উপর। আর এখানে এসেই সে জানতে পারে এই হৈমন্তীর সাথে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হতে চলেছে মিতদ্রু। একটা অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মধ্যে পরে সে। একটা অদ্ভুত দ্বন্দ চলতে থাকে তার মনের মধ্যে।”