“Book Descriptions: একটি জাতিকে জেগে উঠতে হলে তার প্রকৃত পরিচয়কে জানতে হয়। বাঙালি মুসলমানের পরিচয় “বাঙালি” নাকি “মুসলমান” এই দোলাচালের এক গভীর তমসায় নিমজ্জিত। এই আঁধার থেকে বের হয়ে আলোতে আসার মধ্যেই নিহিত আছে বাঙালি মুসলমানের যাবতীয় কষ্ট, লাঞ্ছনা, আর হতাশা থেকে মুক্তি। কিন্তু কে সেই আঁধারকে উন্মুক্ত করে বাঙালি মুসলমানের জাতিগত পরিচয়কে খোলা আকাশের নিচে দাড় করাবে? তিনি কি ইতিহাস গবেষণায় প্রশিক্ষিত? দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত? পুনরুদ্ধার করার চেয়ে পুনরুৎপাদনের দিকেই কি তার খেয়াল?
বাঙালি মুসলমানের জাতিগত পরিচয় নিয়ে জ্ঞানজগতে যা কিছু প্রচলিত আছে তা খণ্ডিত, অসম্পূর্ন এবং প্রায়শঃই বিভ্রান্তিকর। জনপ্রিয় এবং সর্বজনগ্রাহ্য বই-প্রবন্ধ-প্রকাশনা-আলোচনা সবগুলোর মধ্যেই উপস্থিত আছে একটা ওরিয়ান্টালিস্ট কুনজর, যা’ স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে বাঙালি মুসলমানের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে; তাদের জন্ম নির্ণয় করে নিম্নবর্ণের হিন্দুর মধ্যে অথবা বহিরাগত মুসলমানের মধ্যে। জ্যাক দেরিদা, মিশেল ফুকো আর এডোয়ার্ড সাইদের বরাতে "বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন" বইটি প্রথমে বাঙালি মুসলমানের ইতিহাসচর্চার মধ্যে থাকা এই কুনজরকে তত্ত্বীয় আর পদ্ধতিগত অঙ্গনে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং অগ্রহণযোগ্য প্রতিপন্ন করেছে। এরপর অসীম রায় এবং রিচার্ড ইটনের গবেষণার পাটাতনে দাঁড়িয়ে পূর্ব বাংলার চাষাভুষা প্রান্তিক মুসলমানের আত্মপরিচয়ের চিত্রকল্প এঁকেছে। একই সাথে জাতি, জাতীয়তা এবং জাতিরাষ্ট্র নিয়ে জ্ঞানতাত্ত্বিক আলাপের সূত্র ধরে এই বই বাঙালি মুসলমানকে বাংলার হিন্দু এবং বহিরাগত মুসলমানের থেকে স্বতন্ত্র একটি জাতি হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
বাঙালি মুসলমানের পরিচয় বিষয়ক প্রচলিত জানাশোনার বাইরে সম্পূর্ণ নতুন আলাপ নিয়ে এই বই আপনার চিন্তাজগতে ঝড় তুলবে, বিনাপ্রশ্নে সঠিক বলে গ্রহণ করা জ্ঞানকে জোরালো প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে, এবং সেই সাথে দিবে বাঙালি মুসলমানের সঠিক পরিচয় খোঁজার পথের দিশা।
বাঙালি মুসলমানের জাতিগত পরিচয়ের প্রশ্নের উত্তরে শেষ কথা নয়, বরং জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চায় স্বীকৃত রীতির অনুসরণ করে এই বই আপনাকে উদ্বুদ্ধ করবে বিদ্যমান জ্ঞানের প্রতি প্রশ্ন উত্থাপন করতে, তথ্য ও যুক্তির নিরিখে সাধারণ জানাশোনাগুলোকে যাচাই করে নিতে, নতুন নতুন তত্ত্ব ও পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞানের পরিধি বিস্তার করতে।” DRIVE