‘মৌনব্রত’ নামে দৈনিক বাংলায় একটা ধারাবাহিক লেখা শুরু করেছিলাম। সেখানে হঠাৎ 'তিথি’ নামের একটি চরিত্র চলে এল। নিশিকন্যা। লক্ষ্য করলাম, তার কথা লিখতে বড় ভাল লাগছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে এই জাতীয় মেয়েদের আমি চিনি না। শুধুমাত্র কল্পনার আশ্রয় করে তাে আর একটি লেখা দাঁড় করান যায় না। আমি নানান জনের কাছে যাই, কেউ তেমন সাহায্য করেন না। মজার ব্যাপার হল সাহায্য পেয়ে গেলাম অকল্পনীয় একটি সূত্র থেকে। এই ভূমিকায় গভীর মমতা ও ভালবাসায় সেই সূত্রের ঋণ স্বীকার করছি। বইটি শুরুতে 'রাত্রি' নামে ছাপা হচ্ছিল। একদিনের কথা, উপন্যাস লিখছি, আমার স্ত্রী রেকর্ড প্লেয়ারে গান বাজাচ্ছেন—হঠাৎ সমস্ত ইন্দ্রিয় চলে গেল গানে- 'জনম জনম তব তরে কাঁদিব'। গান শুনতে শুনতে নিজে খানিকক্ষণ কাঁদলাম এবং পরে উপন্যাসের নাম পাল্টে দিলাম, 'রাত্রি' থেকে তা হয়ে গেল 'জনম জনম'। আমার প্রকাশক খুব বিরক্ত হলেন। রাগী-গলায় বললেন, এসব কি করছেন- 'রাত্রি' নামে ফর্মা ছাপা হয়ে গেছে। আমি বললাম, হােক। প্রকাশক চোখের দৃষ্টিতে আমাকে ভস্ম করতে চাইলেন-পারলেন না। যে কম্পােজিটর এই বই কম্পােজ করত, সে আমার কাটাকাটির বহর দেখে চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেল—নানান যন্ত্রণা। তবু সব যন্ত্রণার পরেও বইটি বের হচ্ছে—এই আমার আনন্দ।